সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া নিউজ ডটকম।
প্রকাশিত: ২০/০৪/২০২৪ ৪:১৮ পিএম , আপডেট: ২০/০৪/২০২৪ ৪:২৩ পিএম

নেতৃত্বের গুণাবলী সবার মধ্যে থাকে না। একজন প্রকৃত নেতা তিনিই যিনি কর্মীর মনের ভাষা পড়তে পারেন, চোখের দিকে তাকালেই কর্মীকে বুঝতে পারেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন কর্মীর নামও স্মরণ রাখতে পারেন- নেতা যদি প্রকৃত কর্মীকে চিনতে না পারেন, কর্মীর মনের ভাষা পড়তে না পারেন, কর্মীর বিপদে-সংকটে সাধ্যমতো পাশে দাঁড়াতে না পারেন-তিনি নেতা নন, তিনি অভিনেতা।
তেমনই একজন নেতাকে পেয়েছেন উখিয়াবাসী। যার পরিবারই একটি রাজনৈতিক পরিবার। যার বেড়ে ওঠা রাজনীতি দেখতে দেখতে,পারিবারিক ভাবেই রাজনীতিতে আসা। নেতা কর্মীদের ভালবাসা নিয়ে ভয়কে জয় করে, বাধা বিপক্তি অতিক্রম করে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এতক্ষন যার কথা বলছিলাম তিনি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। যিনি একাধারে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

তৃণমূল থেকে শুরু করে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা। সর্বত্রই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর দক্ষ নেতৃত্বের ছোঁয়া। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে গুছিয়ে একটি সাজানো সংগঠনে পরিণত করেছেন তিনি। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়নে। একের পর এক বৈঠক করেছেন। দলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেছেন ক্লান্তিহীন। সিনিয়ার, জুনিয়ার, কর্মী সমর্থক সবার সাথে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এখন আওয়ামী লীগের সেই দুঃসময় আর নেই, এখন এক ঘন্টার ঘোষণায় রাজপথ মুখরিত হয় মিছিলে,পথসভা হয় লোকারণ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের সর্ব দক্ষিণের দুটি সীমন্ত উপজেলার একটি উখিয়া। কক্সবাজারে সীমান্তঘেষা উপজেলা উখিয়ায় ১৯৯১ সালের পর থেকে বিএনপি সরকারের সময় সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী পরিবারের টানা শাসনে অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল বর্তমান সরকারী দল আওয়ামীলীগ। রাজনৈতিক মাঠে ৪ বার সাংসদ নির্বাচিত হন বিএনপির সাবেক এমপি শাহাজাহান চৌধুরী। উপজেলা পর্যায়ে শাহাজাহান চৌধুরীর ভাই এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী ও সরওয়ার জাহান চৌধুরী বারবার নির্বাচিত হন। পরে রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে খ্যাত রাজাপালং ইউনিয়নেও তাদের পরিবারের শাহ কামাল চৌধুরী একচেটিয়া টানা ৪ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সবকিছুতেই শাহাজাহান চৌধুরী পরিবারের একচ্ছত্র আধিপত্য। রাজনৈতিক মাঠে কোনটাসা আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক সংকটে পড়ে কক্সবাজারের বিশেষ অঞ্চল হিসেবে খ্যাত উখিয়ায়।
এদিকে উখিয়ার রাজনীতি শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে দুটি পরিবারের মধ্যে। দুটি পরিবারই চৌধুরী পরিবার। এর একটি শাহাজাহান চৌধুরী পরিবার অন্যটি নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়া চৌধুরী পরিবার। বিএনপির জামাত অধ্যুষিত কক্সবাজারের রাজনীতি একসময় বিএনপি জামাতের একচ্ছত্র অধিপত্য ছিল। উখিয়া টেকনাফেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিশেষ করে উখিয়া উপজেলায় সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর বাড়ি হওয়ায় বিএনপির জামাতের আধিপত্য ছিল একটু বেশিই। কক্সবাজার জেলাব্যাপী ছিল শাহাজাহান চৌধুরী পরিবারের বিস্তৃতি। বিএনপি সরকারের সময় শাহজাহান চৌধুরী সংসদ সদস্য থাকার পাশাপাশি জেলা জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন শাহজাহান চৌধুরীর ছোট ভাই এডভোকেট শাহজাহাল শাহজালাল চৌধুরী। সবকিছুতেই তাদের নিয়ন্ত্রণ। সে সময় দীর্ঘদিন বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মাঠে আবির্ভাব তরুণ প্রজন্মের নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর। পিতা নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়া চৌধুরীর জনপ্রিয়তা ও আদর্শকে কাজে লাগিয়ে নেমে পড়েন পুরোদমে রাজনীতিতে। তিনি প্রথমে কক্সবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন । পরবর্তীতে ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত উখিয়া উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন । ২০১৩ সালে কাউন্সিলদের প্রত্যেক ভোটে রাজপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি,পরে ২০১৪ সালে ৬ই ডিসেম্বর পুরো উপজেলা কাউন্সিলদের প্রত্যেক ভোটে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এর ফলস্বরূপ ২০২২ সালের ২৮ জুলাই কাউন্সিলর অধিবেশনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীক।
জন কল্যাণে কাজ করে দলীয় রাজনীতিতে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এসেও বাজিমাত করেন। উখিয়া সদরের গুরুত্বপূর্ণ রাজা পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পরপর তিনবার। যা স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে তিনিই প্রথম যিনি পরপর তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। সেই থেকে শুরু, এখনো চলছে প্রত্যন্ত জনপদে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর অদম্য পদচারণা, এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে দুর্দিনে আস্থার প্রতীক তিনি, যেকোনো বিয়ে বা অনুষ্ঠানে সবর উপস্থিতি থাকে তার। রাজাপালং ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন তিনি, একাধারে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকায় সরকার ও দলের পক্ষে বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন তিনি। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যার ঘর নেই তাকে ঘর দিচ্ছেন, যেখানে ব্রিজ-কালভার্ট নেই সেখানে ব্রিজ- কালভার্ট করে দিচ্ছেন, যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে দিচ্ছেন। যেখানে রাস্তা নেই সেখানে রাস্তা করে দিচ্ছেন। উখিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন কোন রাস্তা নেই যেখানে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর নেতৃত্বের ছোঁয়া লাগেনি। তাইতো উখিয়ার জনগণের মধ্যে কারো কাছে তিনি তরুণ সমাজের আইডল আর কারো কাছে তিনি দুঃখী গণমানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, সেবা ও সততার ব্রত নিয়ে দল এবং জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব নিষ্টার সাথে পালন করার চেষ্টা করি সময়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, নেত্রীর একজন কর্মী হিসেবে দল ও জনতার স্বার্থে যেকোনো ভালো প্রয়াসে আমৃত্যু নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।”

পাঠকের মতামত

কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিস থেকে দুই রোহিঙ্গা তরুণী গ্রেপ্তার

পাসপোর্ট তৈরি করতে আসা কক্সবাজারের আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে মায়ানমারের নাগরিক দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে গ্রেপ্তার করা ...

উখিয়ায় হুমকির মুখে বনভূমি

কক্সবাজারের উখিয়ায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামাজিক বনায়ন বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বনের কর্তা ব্যক্তিরা গড়িমসি করার কারণে এ ...

কক্সবাজার সিটি কলেজে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ

কক্সবাজার সিটি কলেজে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত ...

ইসলামী চেতনা নিয়েই এই বাংলাদেশে আমাদের বাঁচতে হবে : সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইফ ও সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, আল্লাহর অস্ত্বিত্বকে ...

রোহিঙ্গা সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের জীবিকায় নতুন মার্কিন উদ্যোগ

কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের জীবিকা ও জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যে ...

উখিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বেকারিসহ ৩ প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড

কক্সবাজারের উখিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশনের দায়ে ৩ প্রতিষ্ঠানকে মোট ...